বৈশ্বিক জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশের জোরালো এবং উদ্ভাবনাময়ী ভূমিকার জন্য জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বান কি মুন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও সাহসী এবং দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় নানাবিধ দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে সারা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’
স্থানীয় সময় ১৬ অক্টোবর, মঙ্গলবার জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুন নেদারল্যান্ডে গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেছেন।
১৭ অক্টোবর, বুধবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
জলবায়ু অভিযোজনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত এবং এর সমস্যা সমাধানে জিসিএ একটি নতুন উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, কোস্টারিকা, মার্শাল আইল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, চীনের প্রিমিয়ার, জার্মান চ্যান্সেলর এবং নেদারল্যান্ড, ভারত, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ইথিওপিয়া কো-কনভেনার এবং গ্রেনাডার প্রধানমন্ত্রী জিসিএর কনভেনর।
জিসিএর কো-কনভেনর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ওই অনুষ্ঠানে যোগদানকারী পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘কেবল আলোচনাতে এ পরিবেশ ও জলবায়ু সমস্যার সমাধান হবে না। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অর্থায়ন প্রয়োজন।’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশসমূহে ব্যক্তিপর্যায়ে অর্থায়ন খুবই দুষ্কর, ফলে উন্নত দেশসমূহকে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থায়নে এগিয়ে আসতে হবে।’
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন আন্তঃদেশীয় সমস্যা। হিমালয়ের বরফ গলার মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ এ সময় তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, হিমালয় বেসিন উপযোগী যথাযথ সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত তার উদ্বোধনী ভাষণে জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশের সাফল্য এবং চ্যালেঞ্জের প্রতি আলোকপাত করেন।
জিসিএর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ তার নিজস্ব দৃষ্টান্তমূলক এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রয়োগের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা এবং অগ্রগতি সম্ভব করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদানের বিষয় তুলে ধরে তাদের বাসস্থান এবং আহারের ব্যবস্থা করতে কীভাবে বাংলাদেশের পরিবেশের ওপর এর অভিঘাত হচ্ছে, তা তুলে ধরেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘জলবায়ু অভিযোজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়াকে একটি পরিবেশবান্ধব এলাকা হিসেবে দেখতে চায় এবং এ ক্ষেত্রে করণীয় সবকিছুতে বাংলাদেশ রোল মডেলের ভূমিকায় থাকবে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন