নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে
নেত্রকোনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ছবি: প্রথম আলো
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, ‘যাঁদের বয়স ৬৫ পার হয়ে গেছে, এখন থেকে তাঁরাও হজে যেতে পারবেন। সবাই যেন নিরাপদে হজে যেতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদেরও হজ পালন করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। করোনার কারণে দুই বছর পবিত্র হজ পালন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আমরা হজ পালন করতে পেরেছি। এখন থেকে সবকিছু সহজ হয়ে যাচ্ছে। আগে হজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেক সময় লাগত। এখন কয়েক দিনের মধ্যে সেটা সম্ভব হয়।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদুল হক খান এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৩৬ বছরে যা সম্ভব হয়নি, তা প্রায় ১৪ বছরে শেখ হাসিনা সরকার সম্ভব করছে। সবকিছুতে উন্নয়ন হচ্ছে। শুধু ইসলাম ধর্মের জন্যই নয়, পাশাপাশি বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের আমানত চার কোটি থেকে সাত কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৌদ্ধবিহার, প্যাগোডা নির্মাণ ও সংস্কারে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, অসচ্ছল ভিক্ষু ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রায় ৩৮ লাখ টাকার অনুদান, ২ হাজার ৪ বৌদ্ধবিহারে ৭ কোটি ৮৫ লাখ, বৌদ্ধবিহার ও শ্মশান উন্নয়নে ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অর্থায়নে নেপালের লুম্বিনীতে বৌদ্ধবিহার নির্মাণে ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কারে ২৬৩ কোটি টাকা, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির উন্নয়নে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা, পুরোহিতদের প্রশিক্ষণে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প এবং মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। দেশের এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে শেখ হাসিনা সরকারকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনির হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য দেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত সরকার, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার, প্যানেল মেয়র মহসিন আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্পিতা খানম, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ সরকার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সীতাংশু বিকাশ আচার্য, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে হাজার বছর ধরে বহু ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করছেন। প্রতিটি ধর্মে শান্তির কথা বলা আছে। সব ধর্মকে সম্মান দিতে হবে। স্বাধীনতাযুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ রক্ত দিয়েছেন। হাজার বছরের এই সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন