শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২

দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিল জিয়াউর রহমান : শেখ হাসিনা


জিয়াউর রহমান দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছে। আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিসহ মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাত ধরে যেসব দল তৈরি হয়েছে, সে দলগুলোর মধ্যে কোনো গণতন্ত্রের চর্চা নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল। দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেশের মানুষকে শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্য নিয়ে। যারা মার্শাল ল দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, এমন প্রশ্নও রাখেন তিনি। 

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে টানাপোড়েন হলে কূটনৈতিক উপায়ে ফয়সালা করব: ওবায়দুল কাদের


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সঙ্গে কোনো টানাপোড়েন হলে কূটনৈতিক উপায়ে ফয়সালা করা হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে শাহবাগের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শোনেন, আজকে আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের কোনো টানাপোড়েন হলে কূটনৈতিক উপায়ে ফয়সালা করব। আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র, উসকানি দিচ্ছে বিএনপি। আমি যুক্তরাষ্ট্রসহ সবাইকে আশ্বস্ত করছি, কূটনীতিকদের জন্য নিরাপত্তার কোনো অভাব বাংলাদেশে নেই। সবাই নিরাপদে থাকছে।’

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী  

ঢাকায় নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত বুধবার সকালে রাজধানীর শাহীনবাগে প্রায় এক দশক ধরে নিখোঁজ বিএনপির নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে একদল লোক তাঁকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তিনি বেরিয়ে আসেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকেও এ ঘটনা নিয়ে উদ্বেগের কথা বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল জানিয়েছেন। 

ছাত্রলীগ করে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করা যাবে না : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, শুধু স্লোগান দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা হওয়া যায় না। ছাত্রলীগ করতে হলে দলের আদর্শ ও চেতনাকে বুকে ধারণ করতে হবে। ছাত্রলীগ অন্য আর পাঁচটা দলের মতো সংগঠন না। ছাত্রলীগের সঙ্গে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জড়িত। ছাত্রলীগের নেতা হতে শুধু সমর্থন বাড়িয়ে লাভ নেই। দলের প্রতিটি আদর্শ মেনেই নেতৃত্বে আসতে হবে। ছাত্রলীগ করে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করা যাবে না।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পীরগাছা উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া। এর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। দলে যেন কোনো জামায়াত-শিবির, বিএনপি অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, একাত্তরের পরাজিত শক্তিই ৭৫ ঘটিয়েছে। তারা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে এখনো সুযোগ খুঁজছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু কালকা বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাব্বির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক একেএম তানিম আহসান চপল প্রমুখ।

এর আগে সকালে পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সেখানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দ্রত এগিয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গ্রাম পরিণত হয়েছে শহরে। দেশে নতুন শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠছে। কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে কর্মক্ষম হতে হবে। ঘরে ঘরে শিক্ষিত সন্তান থাকলে মানুষের অভাব থাকবে না।

মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির


মেট্রোরেলের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কলকাতা থেকে ঢাকায় মেট্রোরেলের ভাড়া অনেক বেশি। এতে করে যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে ব্যাহত হবে মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা কলকাতায় মেট্রোরেলের ভাড়া ও ঢাকায় মেট্রোরেলের ভাড়ার একটি চিত্র তুলে ধরেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, কলকাতায় মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ রুপি বা ৬ টাকা। আর ঢাকায় মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। এছাড়া কলকাতায় মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫ রুপি বা ৩১ টাকা। আর ঢাকায় মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা।

কিলোমিটারের হিসাব তুলনা করে বলা হয়, কলকাতায় ৫ রুপি বা ৬ টাকা দিয়ে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। আর ১০ রুপিতে যাওয়া যায় পাঁচ কিলোমিটার, ১৫ রুপিতে ১০ কিলোমিটার, ২০ রুপিতে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়। ২০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ রুপি বা ৩১ টাকা লাগে।

অন্যদিকে ঢাকায় মেট্রোরেলের কিলোমিটারের ভাড়ার হিসাব তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, উত্তরা থেকে মতিঝিল ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা, যা কলকাতার মেট্রোরেলের চেয়ে চারগুণ বেশি। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মেট্রোতে একই দূরত্বে ৪০ রুপি বা ৫০ টাকা লাগে, যা ছুটির দিনে ৩০ রুপিতে নেমে আসে। দিল্লির মেট্রোতে ৩২ কিলোমিটার পথে ৬০ রুপিতে যাতায়াত করা যায়।

পাকিস্তানের মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে বলা হয়, লাহোরে অরেঞ্জ লাইন মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া পাকিস্তানি ২০ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ টাকা। ২৭ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ টাকা লাগে। লাহোরের মেট্রোতে প্রথম চার কিলোমিটার ২০ রুপি বা ৯ টাকা। পাঁচ কিলোমিটার থেকে আট কিলোমিটারের জন্য ২৫ রুপি বা ১১ টাকা, ৯-১২ কিলোমিটারের জন্য ৩০ রুপি বা ১৪ টাকা লাগে। ১৩-১৬ কিলোমিটারের জন্য ৩৫ রুপি বা ১৬ টাকা লাগে। ১৬-২৭ কিলোমিটারের জন্য ৪০ রুপি বা ১৮ টাকা লাগে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকা ও কলকাতা শহরের সামাজিক অবস্থা, মাথাপিছু আয় এবং গড় জিডিপি বিবেচনায় নিলে দেখা যায় প্রায় সব সূচকে সমান অবস্থানে দুটি শহর। কিন্তু কলকাতার মেট্রোরেলের তুলনায় ঢাকার মেট্রোরেলে ভাড়া দ্বিগুণ। আর সর্বনিম্ন ভাড়া চার গুণ বাড়তি। এতে করে যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর বেসরকারি লক্কড়-ঝক্কড় বাস কোম্পানিগুলো হবে লাভবান। সামর্থ্যহীন যাত্রীরা মেট্রোরেল ব্যবহারের সক্ষমতা হারাবে।

বাংলাদেশে মেট্রোরেল নির্মাণ ব্যয় কলকাতা থেকে বেশি বলে জানান সমিতির মহাসচিব। এসময় তিনি এশিয়ার কয়েকটি মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয়ের উদাহরণ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ২০১৩-১৯ সালের মধ্যে নির্মিত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার নর্থ-সাউথ মেট্রোরেল নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১১-২১ সালের মধ্যে নির্মিত ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরে লাইন-২ এ মেট্রোরেলে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। ভারতের দিল্লি লাইন-১ মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচ হয়েছে ৫ কোটি ৬ লাখ ডলার। ২০১৫-২০ সালে নির্মিত পাকিস্তানের লাহোর অরেঞ্জ মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচ ৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার।

অন্যদিকে সমিতির মহাসচিব জানান, ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ হয়েছে বেশি। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তরা থেকে কমলাপুর ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেলের নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচ হচ্ছে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের পরিবর্তে কেন এত উচ্চমূল্যে মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ হচ্ছে যাত্রীসাধারণ তা জানতে চায়।

তিনি আরও বলেন, একদিকে মেগা প্রকল্পগুলোতে বেহিসেবি খরচ, অন্যদিকে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা ব্যাংকগুলো খালি করে দিচ্ছে। এর মাসুল দিতে হচ্ছে জনগণকে।

প্রকৌশলী ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম বলেন, অনভিজ্ঞ লোকজনকে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়ায় কোনো প্রকার সমীক্ষা বা গবেষণা ছাড়াই সর্বোচ্চ ব্যয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার মেট্রোরেলে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে আশপাশের দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা হয়নি। ফলে মেট্রোরেলের ভাড়া বাসের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। আর ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে ২-৫ গুণ পর্যন্ত বেশি বাড়তি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।

এসময় গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও এফবিসিসিআইএ’র সাবেক পরিচালক আবদুল হক বেশ কয়েকটি দাবি জানান।

এগুলো হলো- মেট্রোরেলের বিদ্যমান ভাড়া কমানোর পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রীদের মাসিক কার্ডে বিশেষ সাবসিডি প্রদান, বন্ধের দিনে আকর্ষণীয় ভাড়া নির্ধারণ, মেট্রো থেকে নামার পর হাঁটার পরিবেশ তৈরির জন্য ফুটপাত পরিষ্কার রাখা, কানেক্টিং রোডে পর্যাপ্ত বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনের ব্যবস্থা রাখা, বিশেষ বিশেষ স্টেশনগুলোতে কার ও বাইসাইকেল পার্কিংয়ের র ব্যবস্থা রাখা এবং মেট্রোরেলের পরিচালনা পরিষদে যাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব রাখা।

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২

দুর্নীতি মামলায় হাজি সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ

মহসীন কবির: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ১০ বছর দণ্ডের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। হাজী সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেন। 

এর আগে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের দেয়া হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার রায় বহাল রাখেন। পরে পূর্ণাঙ্গ সে রায় প্রকাশিত হয়। আদালত তার রায়ে জরিমানার টাকা অনাদায়ে হাজী মো. সেলিমকে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন এবং রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। আর আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে রায়ে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়া এই মামলায় হাজী সেলিমের জব্দকৃত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয় রায়ে। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে এই মামলায় বিচারিক আদালতের ৩ বছরের কারাদণ্ড থেকে হাজী সেলিমকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্ট সে সাজা থেকে তাকে খালাস দেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে এ মামলাটি আবার শুনানি হয়। সময়, যমুনা টিভি

ব্যারিস্টার খোকনসহ ৩৪ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা


মহসীন কবির: গাড়ি ভাঙচুর, ট্রাফিক বক্সে হামলাসহ নাশতার অভিযোগে রমনা থানার মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরবসহ ৩৪ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।  

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

 এদিন এ মামলার ধার্য তারিখ ছিল। জামিনে থাকা আসামিদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজ আব্বাসসহ বেশ কয়েকজন আদালতে হাজিরা দেন। তবে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাইফুল ইসলাম নীরবসহ বাকিরা আদালতে হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

সিএমএম আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির বিষয়টি জানিয়েছেন।  

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বকশীবাজার বিশেষ আদালতে দুর্নীতি মামলার রায় উপলক্ষে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় বিএনপির প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়ে ও ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করে। এতে কতিপয় পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এস এম খায়রুল বাশার বাদী হয়ে ১৮০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। ডিবিসি টিভি ও বাংলানিউজ

৬৫ বছরের বেশি বয়সীরাও এবার হজে যেতে পারবেন: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী


নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে 

নেত্রকোনায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ছবি: প্রথম আলো

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, ‘যাঁদের বয়স ৬৫ পার হয়ে গেছে, এখন থেকে তাঁরাও হজে যেতে পারবেন। সবাই যেন নিরাপদে হজে যেতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদেরও হজ পালন করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। করোনার কারণে দুই বছর পবিত্র হজ পালন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আমরা হজ পালন করতে পেরেছি। এখন থেকে সবকিছু সহজ হয়ে যাচ্ছে। আগে হজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেক সময় লাগত। এখন কয়েক দিনের মধ্যে সেটা সম্ভব হয়।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদুল হক খান এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৩৬ বছরে যা সম্ভব হয়নি, তা প্রায় ১৪ বছরে শেখ হাসিনা সরকার সম্ভব করছে। সবকিছুতে উন্নয়ন হচ্ছে। শুধু ইসলাম ধর্মের জন্যই নয়, পাশাপাশি বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের আমানত চার কোটি থেকে সাত কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৌদ্ধবিহার, প্যাগোডা নির্মাণ ও সংস্কারে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, অসচ্ছল ভিক্ষু ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রায় ৩৮ লাখ টাকার অনুদান, ২ হাজার ৪ বৌদ্ধবিহারে ৭ কোটি ৮৫ লাখ, বৌদ্ধবিহার ও শ্মশান উন্নয়নে ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। 

এ ছাড়া দেশের অর্থায়নে নেপালের লুম্বিনীতে বৌদ্ধবিহার নির্মাণে ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কারে ২৬৩ কোটি টাকা, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির উন্নয়নে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা, পুরোহিতদের প্রশিক্ষণে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প এবং মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। দেশের এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে শেখ হাসিনা সরকারকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনির হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য দেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত সরকার, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার, প্যানেল মেয়র মহসিন আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্পিতা খানম, জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ সরকার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সীতাংশু বিকাশ আচার্য, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে হাজার বছর ধরে বহু ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করছেন। প্রতিটি ধর্মে শান্তির কথা বলা আছে। সব ধর্মকে সম্মান দিতে হবে। স্বাধীনতাযুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ রক্ত দিয়েছেন। হাজার বছরের এই সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।

ভোট চুরি করলে জনগণ জানে কীভাবে সরকার উৎখাত করতে হয়: প্রধানমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। কখনো ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসেনি। আমাদের বিরুদ্ধে সবসময় একটা অপবাদ দেয়া হয়- আমরা নাকি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা ভোট চুরি করতে যাবো কেন। জনগণ আমাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়। তিনি আরও বলেন, ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয় না। জনগণ জানে সেই সরকার কীভাবে উৎখাত করতে হয়। 

আজ দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক জ্ঞানীগুণী বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তত্ত্ব কথা শুনায়, গণতন্ত্রের সবক দেয়, গণতন্ত্র উদ্ধার করতে চায়। আবার সেই আমাদের বুদ্ধিজীবী, এরা বুদ্ধিজীবী নিজেদের অনেকে বলে। আমি বলি বুদ্ধিজীবী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীজীবী। তারা আসলে বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীজীবী।

তারা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে নেতা মেনে তাদের সঙ্গে জড়ো হয় সরকার উৎখাতের জন্য। তিনি আরও বলেন, 'হ্যাঁ, খালেদা জিয়াকে আমরা উৎখাত করেছি, এরশাদকে উৎখাত করেছি, জিয়াকেও আমরা উৎখাত করতে পারতাম। কিন্তু আগেই মরে গেছে। ওখানে একটি দুঃখ যে ওর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আগেই অক্কা পেলো। নিজের লোকদের হাতেই মারা গেল।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিকে কেন মানুষ ভোট দেবে। তারা তো টাকা দিয়ে মনোনয়ন দেয়। মির্জা ফখরুল একজনকে মনোনয়ন দেয়, রিজভী আরেকজনকে দেয়, লন্ডন থেকে তারেক রহমান বেশি টাকা নিয়ে আরেকজনকে মনোনয়ন দেয়। বিএনপির দুজন নেতা আমার কাছে নালিশ দিয়েছে। সিলেটের ইনাম আহমেদ চৌধুরী আমাকে বলেছেন, টাকা দেই নাই বলে আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। এটাই হলো বিএনপির চরিত্র।

গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গুজব ছড়াচ্ছে ব্যাংকে টাকা নেই। সেটা বলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়ার হিড়িক পড়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলে চোরের সুবিধা হবে। আমি আজও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ইনশাআল্লাহ আমাদের ব্যাংকে টাকার কোন সমস্যা নেই। আপনারা গুজবে কান দেবেন না।

তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে। ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীকে বিজয়ের মাসের অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ, এ দেশের প্রতিটি সংগ্রামেই ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে। 

তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলনে শহীদের তালিকা যদি দেখি, সেখানে ছাত্রলীগের শহীদের তালিকাই বড়। ৭৫ এর পর জিয়াউর রহমান যখন অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে, তার প্রতিবাদকারী হাজারো সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে জিয়াউর রহমান যেমন হত্যা করেছে, ঠিক একইভাবে ছাত্রলীগের নেতা সেই বাবুসহ অনেককে গুম করে নিয়ে গেছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি। এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক- সেই আন্দোলন আমরা করেছিলাম। সেই আন্দোলনের ফসল ছিল স্বৈরাচার এরশাদের পদত্যাগ হয়েছিল এই ৬ই ডিসেম্বর। কাজেই গণতন্ত্র মুক্তি দিবস হিসেবে এই দিনকে আমরা পালন করতাম। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাকের দোসর, মোশতাক তাকে সেনাপ্রধান বানায়। একাধারে সেনাবাহিনী প্রধান, চিফ মার্শাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, আবার ক্ষমতা দখল করে রাতের অন্ধকারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেই তার অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়। আমাদের নিরীহ ছাত্রদের হাতে সে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, মাদক তুলে দিয়েছে, তাদেরকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি। শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছিল। সেশনজট শুরু হয়।’

তিনি বলেন, তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করে। ঠিক একই কায়দায় জেনারেল এরশাদও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আক্রমণ, নানা ধরনের ঘটনা ঘটায়। সেখানও আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে যেমন অত্যাচার এবং ৯৬ এ ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে, আবার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেও খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয় ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবার মনে থাকা উচিত, ২০০১ সালে যখনই খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অফিসে ছাত্রদলের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গিয়ে ভিসিকে চেয়ার থেকে সরিয়ে দিয়ে তাদের মনমতো একজনকে বসিয়ে দিলো। রাতের অন্ধকারে ভিসি পদটাও তারা দখল করে নিলো। ২০০২ সালে শামসুন্নাহার হলে গিয়ে মেয়েদের ওপর অকথ্য অত্যাচার করে। একদিকে ছাত্রদল, আরেকদিকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে অত্যাচার চালিয়েছিল এই খালেদা জিয়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর তাহের ও ইউনূসকে হত্যা করে। তাদের অত্যাচারে সারা বাংলাদেশ ছিল অত্যাচারিত, নির্যাতিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই তারা ক্ষমতায় আসে, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থাকলেও তাদের যে অগ্নি-সন্ত্রাস, সেটা তো সকলেরই জানা। ২০১৩ সালে আন্দোলনের নামে অগ্নি-সন্ত্রাস করে প্রায় ৩ হাজার মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করে, ৫০০ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে। সাড়ে ৩ হাজারের ওপর গাড়ি, বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়ে দেয়, কোনো কিছুই ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এটাই তাদের চরিত্র ।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপির কাজই হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা। পুরনো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী যারা আছেন, তাদের নিশ্চই মনে আছে, খালেদা জিয়া হুমকি দিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে তার ছাত্রদলই নাকি যথেষ্ট। তারা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। এর প্রতিবাদে আমি ছাত্রদের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলাম। আমাদের শক্তি জনগণ। আমাদের পেটুয়া বাহিনী লাগে না।’

তিনি বলেন, ছাত্ররা শিক্ষা গ্রহণ করবে। শিক্ষা গ্রহণ করে উপযুক্ত নাগরিক হবে, দেশের দায়িত্বভার ভবিষ্যতে নেবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমি ছাত্রদের হাতে কাগজ-কলম তুলে দিয়ে বলেছিলাম, কেবল নিজেরা শিক্ষিত হবে না, যখন ছুটিতে বাড়িতে যাবে, কোনো নিরক্ষর মানুষ পেলে তাদের স্বাক্ষর-জ্ঞান দেবে। ছাত্রলীগ সেটাই করেছিল। নিজ নিজ গ্রামে তারা শিক্ষা ছড়িয়েছিল এবং তার রিপোর্টও আমাকে দিয়েছিল।

কাল থেকে সারাদেশে সতর্ক পাহাড়ায় থাকবে আওয়ামী লীগ: কাদের


মহসীন কবির: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামীকাল বুধবার থেকে সব পাড়া মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। ডিসেম্বরে খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। প্রস্তুত হয়ে যান। 

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির ডাকে মহাসমাবেশ হয় সমাবেশ। আর আওয়ামী লীগের সমাবেশের ডাকে মহাসমাবেশ হয়। এটাই হলো বাস্তবতা। আজকে তারুণ্যের সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

১৫ আগস্টের ঘটনা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জবাব দিতে হবে আজ, খুনিদের বিদেশে যেতে দিলো কে? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলারও মাস্টারমাইন্ড এই তারেক রহমান। উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে শেষ করা।

দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৪৭ বছরে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা। সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা। তিনি দেশের চিন্তা করেন সার্বক্ষণিক। উনি আমাদের ক্রাইসিস ম্যানেজার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঠিক পথে আছেন। দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে সেটা আজ আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসনীয়। বিটিভি ও চ্যানেল২৪

গণসমাবেশ নস্যাৎ করতে নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণসমাবেশ নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ অভিযোগ করেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগর এবং সারাদেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি, নির্যাতনে দেশে একটা ভয়াবহ ভীতি ও ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছে। 


স্থায়ী কমিটির  বৈঠকে অবিলম্বে এই ধরনের বেআইনি গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা, পুলিশি তল্লাশি বন্ধ করে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। বৈঠকে আরো বলা হয়, বিএনপির সংবিধান সম্মত ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে এই ধরনের নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক ও ভীতিকর করে তুলতে চাইছে সরকার। এই ধরনের গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্ববান জানানো হয়।

ইজতেমা মাঠ অথবা পূর্বাচলে সমাবেশ করতে পারে বিএনপি : ডিএমপি

মাসুদ আলম : মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা রাস্তার ওপর জনসমাবেশ করার অনুমতি দেব না। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার যে অনুমতি দিয়েছি, তা এখনও বহাল আছে।  

আগামী ১০ ডিসেম্বর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার মাঠ অথবা পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে বিএনপি সমাবেশ করতে চাইলে ডিএমপির কোনো আপত্তি থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি দেওয়ার পরেও ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে তারা দেখা করে বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আরামবাগে বিকল্প ভেন্যুর জন্য মতিঝিল বিভাগের ডিসির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে ডিএমপি কমিশনারের কাছে আসেনি।

ডিসি আরও বলেন, তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিকল্প ভেন্যুর কোনো চিন্তা করা হয়নি। কোনো রাস্তার ওপরে ডিএমপি অনুমতি দেবে না।

বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় যে ধরনের কার্যক্রম নেওয়া দরকার ডিএমপি তা নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না চাওয়ার পেছনে বিএনপি কোনো কারণ উল্লেখ করেছে কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, তারা সিকিউরিটির একটা থ্রেট ফিল করছে বলে জানা গেছে। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যত ধরনের পুলিশি সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস আমরা দিয়েছি।

বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন তিক্ত: নিউইয়র্ক টাইমস’র প্রতিবেদন

একসময়ের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক মাস ধরে ফুঁসতে থাকা উত্তেজনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। বাংলাদেশে একজন হিন্দু পুরো...